@কমলিকা |
কবিতার এই যে রহস্যময় জগৎ - এটাই তার ইউ. এস. পি। এই
মায়াবী পরিবেশ বেশি ভাবায় ও আকর্ষণ করে। এক অমোঘ টান বার বার নিয়ে আসে এই শব্দের
খেলা ঘরে। আসলে এ যেন এক অন্য পৃথিবী- ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি। এই গলিপথে ভ্রমণ করা
যায় খেয়াল খুশি মত,অথচ সম্পূর্ণ বন্ধনহীন ও নয়। নিয়ম বানানো, নিয়ম মানা আবার নিয়ম ভাঙ্গা – সবটাই নিজের হাতের মুঠোয়। বাস্তব
ও রূপকথা সেখানে মিলে মিশে এক হয়ে যায়। মনে হয় যেন শব্দ তুলি দিয়ে ক্যানভাস জুড়ে
আঁকছি একের পর এক পটছবি, ঢেলে দিয়ে যাচ্ছি সব রঙ- সুখ, দুঃখ, আনন্দ, হতাশা।
কবিতার কাছে নিজেকে মেলে ধরা যায়। কবিতা আসলে হল ভাষার ওয়েসিস। এতে ডুব দেওয়া যায় জীবনের কঠিন বাস্তবের তপ্ত বালুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে। ধরা যাক একটা স্বপ্ন এই মাত্র ভেঙে গেল, অথবা এইমাত্র একটা স্বপ্ন পূরণ হল। ব্যস, মনে নেমে এল এক ঝাঁক আবেগ ও উচ্ছাস। এই মুহূর্তর সেই স্পার্কটা ধীরে ধীরে সময়ের পড়তে কিন্তু হারিয়ে যাবে। কিন্তু একে যদি একবার নিজের মনের কথা মিশিয়ে লিখে রাখা যায়, সে কিন্তু থেকে যায় তার সেই মুহূর্তর সত্যতা নিয়ে। অনেক বছর পর ও সেই শব্দেরা ফিরিয়ে নিয়ে যাবে সেই আবেগের কাছে। এটা অনেকটা ঝিনুক যেমন বালি থেকে মুক্ত বানিয়ে রাখে। না বানালে দোষের কিছু নেই,কিন্তু বানালে পরবর্তী সময় কোথাও সেটা থেকেই যায়। তবে অমরত্বের লোভ নয়, শুধু মনের মধ্যে তৈরি হওয়া মুহূর্তগুলোকে একটু কাছে রাখতে কবিতার হাত ধরেছি। ভাললাগে মনের কথাগুলোকে বেশ পরিপাটি করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে ফটো এলবামের মত । মাঝে মাঝে হাতে নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার মজাই যে আলাদা।
কোথাও সব মানুষের মনের একটা শিরা হয়তো এক রকম । তাই অন্য কবির লেখা কোন কবিতা মনে হয় যেন আমার কথা বলে। আশায় থাকি আমার শব্দেও হয়তো কেউ খুজে পায় নিজের হারানো কিছু অনুভব। এই মনের সাথে মনের রিফু সেলাই করতে হাত বাড়াই কবিতার দিকে। জানি কবিতাকে ভালবেসে তার কাছে গেলে কবিতা নিরাশ করে না।
প্রকাশিত ‘দৈনিক বজ্রকন্ঠ’ ব্লগ-পত্রিকায় ২৬.০৩.২০২০(আগরতলা, ত্রিপুরা)
No comments:
Post a Comment