আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের রিভিউ :
নীলদীপ চক্রবর্তী :
বাংলা কবিতার সুদীর্ঘ ইতিহাস, মহাকাব্য বা পুরাণের গল্পগাথার সঙ্গে জড়িয়ে পাড়ি দিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি যুগ। সেইসঙ্গে তাকে যুগ প্রয়োজন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা মেনে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নতুন আঙ্গিক, সজ্জা, বিন্যাস ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে চলেছেন একনিষ্ঠ কাব্য-সাধকেরা। উত্তর পূর্বের যে কবিরা বাংলা কবিতাকে আগামী পাঠকের জন্য কঠোর পরিশ্রমে লালিত করে চলেছেন কমলিকা মজুমদার তাঁদের মধ্যে অন্যতম! ২০১৬র ডিসেম্বরএ প্রকাশিত কমলিকার প্রথম কবিতার বই তিনি নিজে ডাকযোগে পাঠালেন, সেই সঙ্গে পেলাম একটি ছোটখাট কবিতা-খনি!ইতিপূর্বে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ওর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু একটি সংকলনের অভাব আমরা অনুভব করছিলাম। আধুনিক সময়ের এক জাগ্রত ও সুচিমুখ উপস্থাপন কবির বই ‘কুয়াশায় ভেজা টাইমলাইন’ । অত্যন্ত যত্নে, নৈপুন্যে ও সংযমে এক একটি কবিতা দিয়ে তিনি এই সময়ের বিভিন্ন স্তরে আঘাত হেনে গেছেন। ইংরেজি শব্দের সাহসী ব্যবহার তাঁর প্রথা ভাঙার বোহেমিয়ানার প্রকাশ। নিকৃষ্ঠ সমাজনীতি, বিকৃত ধর্মব্যাখ্যা, শোষণ ও নারী এই সব বিষয়ের ওপর তীব্র কশাঘাত করা তাঁর কবিতা কিন্তু সৌন্দর্য স্নিগ্ধতা বা শাশ্বত কাব্য থাকার অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হয়নি। ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় কমলিকার মতো প্রতিবাদী কলম অনলস ভাবে এক প্রকৃত কবির দায়ভার বয়ে চলেছে, ‘কুয়াশায় ভেজা টাইমলাইন’, পড়া শেষে, স্তব্ধ পাঠককে এই ভাবেই ভাবাবে!
বরাবরের মতো ভিকি পাবলিশার্স এর মুদ্রণের প্রশংসা না করে পারা যায় না। বইটির শুরুতে লেখকের নিজস্ব কথা, প্রাককথন বা ভূমিকা থাকলে অসংগত হত না। কমলিকা আরো লিখুন, আপনার কবিতা-অস্ত্র ক্রমশ ধারালো হোক!
No comments:
Post a Comment